সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১০

হাসতে নাকি জানেনা কেউ-১৫

১.
এক হাড়-কিপটের গল্প শোনাই। একবার হাট থেকে সেই কিপটে লোকটা একশ টাকা দিয়ে একটি পাঞ্জাবি কিনে নিয়ে আসল। সেই পাঞ্জাবি পরে সে বড় বড় দাওয়াতে যায়, আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যায়, ব্যাবসার কাজে গঞ্জে যায়। এভাবে দুই তিন বছর পরতে পরতে পাঞ্জাবির হাতা গেল ছিঁড়ে। লোকটি অগত্যা সেই পাঞ্জাবির হাতা কেটে ওটাকে মোটামুটি ফতুয়া বানিয়ে ফেলল। ফতুয়া বছর খানিক পড়ার পরে সেটার অবস্থাও যখন শোচনীয় হলো তখন কিপটে লোকটি ওটাকে কেটে ছেঁটে স্যান্ডো গেঞ্জির মত বানিয়ে নিল। সেই স্যান্ডো আরো কয়েক মাস পড়ার পরে যখন ছিঁড়ে গেল সেটাকে কেটে একটা রুমাল বানালো। চলল আরো কয়েক মাস। রুমালটিও যখন আর ব্যবহার করার উপায় থাকলনা তখন সেটাকে পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে সেই কয়লা দিয়ে দাঁত মেজে কুলি করে নদীর জলে মুখ ধুয়ার পড়ে আক্ষেপ করে বলল,
'ইস্‌ আমার একশটা টাকাই জলে গেল'


২.
কী? হাসি আসছেনা? ঠিক আছে তাহলে আরেকটা কৌতুক শোনাই, একটু সুড়সুড়ানি আছে এতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহপাঠীর মধ্যে ভাল বন্ধুত্ত্ব। এর মধ্যে একজন ছেলে আরেকজন মেয়ে। মেয়েটি একটু পাগলা কিসিমের, রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকেনা, উল্টা পাল্টা কথা বার্তা বলে। তো একবার ছেলেটির কি একটা কথায় মেয়েটি বলে উঠে,
'তোর চোখ গালিয়ে দিব।'
ছেলেটি মেয়েটিকে আরেকটু ক্ষ্যাপানোর জন্য মিটিমিটি হাসতে থাকে। মেয়েটির পরের ঝাড়ি,
'তোর নাক ফাটিয়ে দিব।'
ছেলেটি এবারো নির্বাক, শুধু চোখে মিটিমিটি হাসি।
'তোর গলা চেপে ধরব।'
ছেলেটি আগের মতই থাকে।
'তোর ভুঁড়ি গালিয়ে দিব।'
এইবারে ছেলেটি মুখ খুলে,
' দোহাই তোর, ভুঁড়ি পর্যন্তই থাক, আর নিচে নামিসনা !!'
৩.
কী? এবারো হাসতে পারলেননা নাকি? ঠিক আছে আমি থেমে যাচ্ছি, কিন্তু যাবার আগে একটি খবর শুনে যান। খবরটি বিস্তারিত জানতে পারবেন এইখান থেকে
"দুদকের ক্ষমতা খর্বঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে দুদক আইন, ২০০৪ অনুমোদন করেছে সরকার। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।"
২০০৯ এর এপ্রিলে দুদকের হাসান মশহুদ চৌধুরীর চাপের মুখে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ ছিল সবে নবযৌবন পাওয়া দুদকের উপর প্রথম আঘাত। এর পরে গত অক্টোবরে (২০০৯) দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান দুদককে দন্তহীন বাঘের সাথে তুলনা করে বলেছিলেন এর শুধুমাত্র থাবাটিই অবশিষ্ট আছে। তিনি আশঙ্কা করছিলেন যেভাবে দুদককে নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে তাতে অচিরেই এর নখগুলিও কেটে ফেলা হবে যাতে এর থাবাটিও অকার্যকর হয়ে যায়। অবশেষে তাই হলো দুদকের উপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন আসল, স্বাধীন দূর্নীতি দমন কমিশন সত্যিকারের কাগুজে বাঘে পরিণত হলো। অপেক্ষায় আছি সামনে আরো কী হয় তা দেখার।
শুধু একটা অনুরোধ করি, দুদককে কয়লা বানিয়ে কুলি করে নদীর জলে ফেলে দেবার আগেই নিস্তার দিন, দয়া করে আর নিচে নামায়েননা।

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন