এবছরের পানি দিবসের স্লোগান হচ্ছে “Water, water everywhere, only if we share”, যার
মূল কথা হচ্ছে একমাত্র সহযোগীতাই পারে বিপুল চাহিদার বিপরীতে পানির যোগানকে
নিশ্চিত করতে। সেই সহযোগীতা নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় পর্যায়ে, দেশীয় পর্যায়ে এবং
সর্বোপরি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। এই মাসের
মাঝামাঝিতে আলবার্টা এনভায়রনমেন্ট এন্ড সাসটেইনেবল রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের দুই দিন
ব্যাপী এনভায়রনমেন্টাল মডেলিং ওয়ার্কশপে যোগদান করেছিলাম। ওয়ার্কশপটির মূল
উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান, মাটি, বায়ু, পানি ও জীববৈচিত্র, ইত্যাদির
কিভাবে সমন্বিত মডেলিং করা যায় সেটি নিয়ে মত বিনিময়। মজার বিষয় হচ্ছে এবারের পানি
দিবসের থিমের সাথেও এই বিষয়টি দারুণ মিলে যায়, কারন পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায়
সহযোগীতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্ত্বপূর্ন শর্ত হচ্ছে পরিবেশের এই উপাদানগুলোর মধ্যে
সঠিক সমন্বয় স্থাপন করা। এই ওয়ার্কশপের অভিজ্ঞতা নিয়েই আজকে আমার এই নিবন্ধ।
ছোটবেলাতেই শিখেছি আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তাই নিয়ে
পরিবেশ। এই ‘চারপাশে যা কিছু’ এর মানে আসলে কি? আমাদের চারপাশে আছে মাটি, বায়ু আর
পানি- এই তিনটি মাধ্যম। এছাড়া রয়েছি আমরা, মানে মানুষ, আছে অন্যান্ন প্রাণী ও
উদ্ভিদ, যাদেরকে সম্মিলিত ভাবে বলা যেতে পারে জীববৈচিত্র বা বায়োডাইভার্সিটি।
তাহলে ছেলেবেলার সেই সংগাটিকে বড়বেলায় বলতে পারি বায়ু, পানি, মাটি আর জীববৈচিত্র
নিয়েই হচ্ছে পরিবেশ। সুতরাং এনভায়রনমেন্টাল মডেলিং বলতে বুঝি আসলে এই চারটি
উপাদানের মডেলিং। কিন্তু প্রশ্ন আসে এই উপাদানগুলোর মডেলিং আবার কী? এক এক করে
ব্যাখ্যায় আসিঃ
প্রথমে ধরা যাক বায়ু। আমরা জানি আমাদের বায়ুমন্ডল হচ্ছে
এক ধরনের প্রবাহী বা ফ্লুইড। এই বায়ুমন্ডলের গতিবিধি আসলে জটিল কয়েকটি
সমীকরণের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় যাদেরকে একসাথে বলা হয়ে থাকে নেভিয়ার-স্টোকস ইক্যুয়েশন। এছাড়া রয়েছে থার্মোডিনেমিক্সের
ইক্যুয়েশন। এই ইক্যুয়েশনগুলোর সমাধানের মাধ্যমে আসলে বিভিন্ন সময়ে এই বায়ুমন্ডলের
কয়েকটি মৌলিক জিনিস জানা যায়ঃ বায়ুপ্রবাহের বেগ, চাপ ও তাপমাত্রা। এই মৌলিক
বিষয়গুলো জানা হয়ে গেলে এর থেকে অনেক অজানা বিষয় জানা যায় যেমন আজ কতটুকু বৃষ্টি
হবে? কিংবা, ঢাকা শহরের আশুলিয়ায় কোন ইটের ভাটা থেকে দুষিত গ্যাস বের হলে তা কখন ফ্যান্টাসি
কিংডমে এসে পৌছবে এবং কি মাত্রায়, ইত্যাদি। খুব সংক্ষেপে বললে এই হচ্ছে বায়ুর
মডেলিং। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই তথ্যগুলো পেতে কি মডেলিং লাগে? উত্তর হচ্ছে আসলে
যদি আমরা সব জায়গায় সব কিছু সবসময় মাপতে পারতাম সেক্ষেত্রে এই সব জটিল মডেলিং এর কোন
দরকার ছিলনা। কিন্তু সব জায়গায় সব কিছু সবসময় মাপতে পারা যেমন কারিগরী ভাবে সম্ভব
নয় তেমনি সম্ভব হলেও সাধ্যে কুলাবেনা। তাই কি আর করা বাধ্য হয়ে এই সব জটিল
ইক্যুয়েশনগুলো সমাধান করার জন্যই প্রয়োজন মডেলিং। এই মডেলিং হতে পারে দুই রকমেরঃ
এক পরিমানগত ( যেমন কতটুকু বৃষ্টি হবে আজ) ও গুণগতমানগত (যেমন আশুলিয়ার ঐ ইটের
ভাটার প্রভাবে ফ্যান্টাসি কিংডমে বায়ুতে কার্বনের পরিমান কতটুকু বাড়বে)।
আসি মাটিতে। পরিবেশগত দিক দিয়ে বিবেচনা করলে মাটির
মডেলিং বলতে আসলে ল্যান্ডইউজ মডেলিং বুঝে থাকি। ধরা যাক আজ একটি এলাকায় বনভূমি
রয়েছে, হয়ত সময়ের পরিক্রমায় সেই এলাকা একসময় শিল্প এলাকায় রূপ নিবে, বা হয়ে যাবে
নগর। এই প্রক্রিয়াগুলো বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত হিসেব নিকেশ দিয়ে মডেলিং করা যায় আগে
থেকেই।
এবার পানি নিয়ে আলোচনা করা যাক। আমরা ছেলেবেলায় পানি
চক্র নামে যেটা পড়েছি সেই একই জিনিস কিছু দাঁতভাঙা টার্মেনোলজি দিয়ে পড়েছি বড়বেলায়,
যার নাম হচ্ছে হাইড্রোলজিক সাইকেল। আসলে এর মানে কি? এর মানে হচ্ছে উৎস থেকে পানি
চক্রাকারে আবার উৎসতে ফিরে আসে। ব্যখ্যা করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। যেহেতু পৃথিবীর
তিন চতুর্থাংশ সমুদ্রের পানি সেক্ষেত্রে সমুদ্রের পানিকেই উৎস হিসেবে ধরি। সজজে
বলতে গেলে এই সমুদ্রের পানি স্বতঃবাস্পীভবন প্রক্তিয়ায় জলীয়বাষ্পে পরিনত হয়ে উপরে
উঠে যায়, এই বাষ্প পরে মেঘে পরিনত হয় এবং সেই মেঘ ঘনীভূত হয়ে আবার বৃষ্টি হিসেবে
সমুদ্রে আসে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে শুধু সমুদ্রের পানিই যেমন শুধু স্বতঃবাষ্পীভূত
হয়না তেমনি মেঘ থেকে নেমে আসা পানি শুধু সুমুদ্রেই যায়না। গেলে হয়ত হাইড্রোলজিক
সাইকেল অনেক সহজ হতো, কিন্তু পৃথিবীতে জীবন ধারন হয়ত সম্ভব হতোনা। আসলে মেঘ থেকে
নেমে আসা পানির একটি অংশ পড়ে মাটিতে, একটি অংশ সরাসরি পানিতে আর একটি অংশ গাছপালার
উপরে। পানিতে পড়া পানিকে নিয়ে কোন ঝামেলা নেই, কিন্তু বাকী দুইটাকে নিয়ে একটু
ঝামেলা আছে। মাটিতে পড়া পানির একটি অংশ মাটির গভীরে চলে যায় আর একটা অংশ মাটি বেয়ে
বা মাটির কিছুটা ভেতর দিয়ে কাছাকাছি কোন পানির প্রবাহ বা জলাধারে পরিবাহিত হয়। যে
অংশটা গাছপালার উপরে পরে তার একটা অংশ সেখান থেকেই বায়ুতে চলে যায় স্বতঃবাষ্পীভবন
প্রক্রিয়ায় আর একটা অংশ মাটিতে চলে আসে। এত গেল মেঘ থেমে নেমে আসা পানির গল্প।
অন্যদিকে শুধু সুমুদ্র থেকেই পানি বায়ুতে যায়না, মাটি ও গাছপালা থেকেও পানি স্বতঃবাষ্পীভবন
ও প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার বায়ুতে যায়। এছাড়া আছে তুষারপাত, তুষার স্তরের গলন,
হিমবাহের মত জটিল প্রক্রিয়া। এখন যদি জানতে চাই যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদে কতটুকু
প্রবাহ হবে সেটা কিভাবে জানতে পারবঃ এক হচ্ছে মেপে, আর দুই হচ্ছে বাহাদুরাবাদ
পয়েন্টে যমুনা নদীর অববাহিকা অঞ্চল যতটুকু সেইটুকুতে এই পানিচক্রের জটিল হিসেব
নিকেশ করে। প্রথম পদ্ধতিতে শুধু যে অংশে মাপপ সেই অংশেই এই তথ্য জানা যাবে,
দ্বিতীয় পদ্ধতিতে প্রায় সব জায়গাতেই এই তথ্য জানা সম্ভব। এর থেকেও জরুরী হচ্ছে
ভবিষ্যতে পরিবর্তিত জলবায়ু বা পরিবর্তিত ল্যান্ডইউজ পরিস্থিতিতে এই প্রবাহের কি
পরিবর্তন হবে প্রথম পদ্ধতিতে সেটা মাপার জন্য ভবিষ্যতের পানে চেয়ে থাকতে হবে। অথচ পানিচক্রের হিসেব
নিকেশের মাধ্যমে বর্তমানেই সম্ভব। এইযে এতক্ষন এত এত প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করলাম
এইগুলোকে একত্রিত করে হিসেব নিকেশ মানেই হচ্ছে হাইড্রোলজিকাল মডেলিং।
কিন্তু এতো গেল শুধু পানির পরিমানের কথা, এর পাশাপাশি
পরিবেশের সাথে গুরুত্ত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে পানির গুণগত মান। পানির গুনগত মান হতে
পারে ভৌত (পানির স্বাদ, গন্ধ, অন্যান্ন অদ্রাব্য
পদার্থের পরিমান), রাসায়নিক (পানিতে বিদ্যমান খনিজ লবনের পরিমান)ও জৈবিক (পানিতে
বিদ্যমান অক্সিজেনের পরিমান)। প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত
পানিতে এই সবগুলোরই বিভিন্ন মান থাকে, জায়গা ভেদে। কিন্তু
পরিবেশের অংশ হিসেবে আমরা এই পানির মানকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত করি। যখন এই পরিবর্তনের
মান একট বিশেষ মাত্রাকে ছাড়িয়ে যায় তখন আমরা সেই পানিকে দূষিত পানি বলি। এখন
হাইড্রোলজিক সাইকেলের অংশ হিসেবে আমরা জেনেছি পানি মাটি বেয়ে, গাছ বেয়ে, বায়ু
মন্ডলকে ধুয়ে তবেই নদীতে আসে। এই প্রতেকটি প্রক্রিয়ায় দূষনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া
অনেক দূষিত মাত্রার পদার্থ সরাসরি নদীতে ফেলা হয়। এইভাবে সেই আগের উদাহরনের মতই
যদি প্রশ্ন করা হয় যমুনার বাহাদুরাবাদে পানিতে ক্লোরিনের পরিমান কত সেটা কিন্তু
দুই ভাবে বের করা যায়ঃ এক হচ্ছে মেপে আর দুই হচ্ছে হাইড্রোলজিক সাইকের মডেলিং এর
সাথে পানির এই গুনগত মানেরও মডেলিং করা। কোনটি কখন কার্যকরী সেটা বোধহয় পাঠক
এতক্ষনের আলোচনায় কিছুটা অনুধাবন করেছেন।
আসা যাক জীববৈচিত্রে। পরিবেশের সাথে
জীববৈচিত্রের সম্পর্ক চিরন্তন। এইজন্যই বর্তমান সময়ের কথা
বিবেচনা করলে সুন্দরবনে যেমন শ্বেত ভল্লুক পাওয়া যায়না, ঠিক তেমনি আর্কটিক অঞ্চলে
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মেলেনা। প্রত্যেকটি জীব এক একটি পরিবেশে সাথে অভিযোজিত,
যা নির্ভর করে জলবায়ু, মাধ্যমের অবস্থা, ও খাদ্যশৃংখলের উপর। অভিযোজনের এই
নিয়ামকগুলোর পরিবর্তন হলে জীববৈচিত্রও তাই পরিবর্তিত হয়। একটি উদাহরনের মাধ্যমে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা
করা যাক। আমরা অনেকেই হয়ত জানিনা যে নদীতে একেক মাছ একেক গভীরতায় অভিযোজিত কারন
একেক গভীরতার পানির গতিবেগ, তাপমাত্রা ও খাদ্যশৃংখল একেক রকম। এখন ধরা যাক একটি
প্রাকৃতিক ভাবে বয়ে যাওয়া নদীতে প্রাকৃতিক ভাবেই কিছু প্রজাতির মাছের অভিযোজন
রয়েছে। এখন এই নদীটির উজানে বাঁধ দিয়ে আমরা এর প্রবাহের গতিবেগ, ঋতুভিত্তিক
প্রবাহের বৈচিত্র এগুলো পরিবর্তন করলাম। এর ফলে যা হবে তা হচ্ছে ঐ অঞ্চলের মাছের
অভিযোজন বিনষ্ট হবে। এই নতুন পরিবেশে কিছু প্রজাতি হয়ত আবার অভিযোজিত হবে আবার
কিছু প্রজাতি হয়ত পারবেনা। যারা পারবেনা তারা হয় মাইগ্রেট করবে অন্য অঞ্চলে অথবা
সেই প্রজাতির বিলুপ্ত ঘটবে। এই প্রক্রিয়াগুলোকে হিসেব নিকেশের মাধ্যমে বের করাই
হচ্ছে বায়োডাইভার্সিটি মডেলিং।
উপরের অনুচ্ছেদগুলোতে পরিবেশের এই চার উপাদানের মডেলিং
বলতে আমরা কি বুঝি তা খুব সাধারণ আঙ্গিকে দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু এই চার উপাদানের
সমন্বিত মডেলিং কি? সেটা আলোচনার আগে জানা দরকার কিভাবে এই চার উপাদানের পারস্পরিক
ইন্টার্যাকশন বা মিথস্ক্রিয়া ঘটে। একটি উদাহরনের মাধ্যমে এই মিথিস্ক্রিয়াগুলোকে
দেখানো যাক। ধরা যাক একটি নদী অববাহিকা অঞ্চলে শতকরা ৫০ ভাগ ছিল বনভূমি। আমরা সেই
বনভূমি কমিয়ে শুণ্যে নামিয়ে আনলাম, এর প্রতিক্রিয়া কি কি হবে? আমরা জানি বনভূমি
একটি অঞ্চলে আচ্ছাদন হিসেবে কাজ করে, ফলে সূর্যালোক সরাসরি সেখানে পৌছতে পারেনা।
এজন্যই দেখা যায় বনভূমির মাটি সাধারনত আর্দ্র থাকে। যদি বনভূমি কেটে ফেলা হয় সেই
অঞ্চলে তখন সরাসরি সূর্যালোক পৌছবে মাটিতে এবং মাটি আস্তে আস্তে শুষ্ক হবে। আবার
আমরা জানি বনভূমি ইভ্যাপট্রান্সপিরেশন এর মাধ্যমে বিপুল পরিমান পানি বায়ুতে যোগান
দেয়। পানিচক্রের নিয়মে সেই পানি আবার ঘণীভূত হয়ে বৃষ্টি আকারে মাটিতে আসে। বন কেটে
ফেলার ফলে পানিচক্রের এই প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হবে। কম পানি বায়ুতে যাবে সেই সাথে
বৃষ্টির হারও কমে যাবে। ফলে মাটির আর্দ্রতা আরো কমবে। এই দুই ভাবে মাটির আর্দ্রতা
কমে যাবার ফলে ঐ অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তত হবে এবং আস্তে আস্তে তা মরুভূমিতে পরিনত
হবে। আমরা জানি মাটি যেমন তাড়াতাড়ি গরম হয় তেমনি তাড়াতাড়ি ঠান্ডাও হয়, কারন মাটির
তাপধারন ক্ষমতা অনেক কম। কিন্তু বনভূমি যেমন গরমও হয় আস্তে আস্তে তেমনি তাপ ছেড়েও
দেয় আস্তে আস্তে। ফলে বনভূমিতে দিনে ও রাতে তাপের তারতম্য অনেক কম। মরুভূমির শুষ্ক
মাটিতে এই তারতম্য অনেক বেশি ফলে সেখানে দিন যেমন অনেক গরম তার তেমন অনেক ঠান্ডা।
এই পরিবর্তত পরিবেশে তাই জীববৈচিত্রও পরিবর্তিত হবে। আবার যেহেতু বৃষ্টিপাত কমে
যাবে সেক্ষেত্রে পানিচক্রের পরিবর্তনের ফলে ঐ অববাহিকায় পানির যোগান কমে যাবে,
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আস্তে আস্তে নেমে যাবে। তবে এই পরিবর্তন গুলো ঘটবে অনেক সময়
নিয়ে, বিষয়টা এরকম না যে আজ অর্ধকের বন কেটে ফেললাম আর কাল সকালে উঠে দেখলাম আমার
বাসার সামনের অঞ্চল মরুভূমি হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের গত কয়েক দশকের
জলবায়ুর পরিবর্তন কিছুটা এই প্রক্রিয়ার বাস্তবিক উদাহরণ।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যেহেতু এই প্রক্রিয়াগুলো একে অপরের সাথে খুব বেশি পরিমানে মিথস্ক্রিয়া করে তাই সত্যিকার অর্থে পরিবেশে মডেলিং বলতে এই উপাদানগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলো আলাদা ভাবে মডেল করা হয়। ঠিক এইজন্য, যারা বায়ু মডেল নিয়ে কাজ করে তারা হাইড্রোলজিকাল মডেলিং নিয়ে মাথা ঘামায়না, যারা হাইড্রোলজিকাল মডেলিং নিয়ে কাজ করে তারা ল্যান্ড ইউজ চেঞ্জ, ওয়াটার কোয়ালিটি মডেল ইত্যাদি নিয়ে জানার চেষ্টা করেনা। আর বলতে দ্বিধা নেই এরা কেউই জীববৈচিত্র নিয়ে ভাবার সময়ই পায়না। সত্যিকার অর্থে সমন্বিত পরিবেশ মডেলিং হয়ত সময়ের ব্যপার, সেই সাথে জটিল এই প্রক্রিয়াগুলোকে এক সূতোয় বাঁধা হয়ত কারিগরীগত ভাবেও অনেক চ্যালেঞ্জিং কিন্তু তার আগে এই চার উপাদানের মডেলিং এর সাথে যুক্ত মানুষগুলোর পরস্পরের সাথে মিথস্ক্রিয়া, মত বিনিময় ও সর্বোপরি সমন্বিত মডেলিং এর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রয়োজন।পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এই আন্তর্জাতিক সহযোগীতার বছরে (২০১৩) অন্ততপক্ষে আমরা সমন্বিত পরিবেশ মডেলিং