রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৫

একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আকুতি

একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আকুতি
রচনাঃ নকিব আহমেদ

আবৃত্তিঃ জাহিদুল ইসলাম
বাংলাদেশ কানাডা এসোশিয়েশন এডমন্টন একুশ ও স্বাধীনতা অনুষ্ঠান, মার্চ ১৪, ২০১৫


বড় দুঃখ ভরা মন নিয়া আজ আপনাগো সামনে আইসা দাড়াইছি।হৃদয় আমার গভীর শোকে ভরা, কষ্ট আর বেদনায় জর্জরিত। অনেক কথা বলতে চাই, কিন্তু শোনার কেউ নাই। লোকে বলে আমার মাথার স্ক্রু নাকি ঢিলা, আমি নাকি আউলা ঝাউলা কথা বলি... হা হা হা ...

হ, কথা সত্য, আমিত পাগল কিসিমের লোক, আবোল তাবোল কথা বলি। কখন, কি যে বলি, সব মনেও থাকেনা। আমারে পাগল ভাইবা আপনারা তামাশা দেখেন, ঠাট্টা মশকরা করেন। আর ভাল মানুষের মুখোশ পইড়া যারা আপনাগো সামনে বইসা আছে তাগোর বিরুদ্ধে আপনারা টু শব্দও করেননা। 

অথচ দেখেন, ক্ষমতার লোভ, অবরোধ, আর হরতালের নামে নিরীহ জনগন নিয়া আমাগো নেতারা কেমন ছিনিমিনি খেলতাছে। ঐ যে দেখেন, নিরীহ মানুষগুলান পেট্রোল বোমার আগুনে ঝইলসা যাইতাছে, ক্রস ফায়ারের নামে অন্যায় ভাবে মানুষ মারা হইতাছে, ধর্মের নামে রাজপথে পশুর মত মানুষ কুপাইয়া মারতাছে। 

শনিবার, ২২ মার্চ, ২০১৪

বিশ্ব পানি দিবস ২০১৪: পানি ও শক্তি

ভূমিকাঃ


প্রতিবারের মত এবছর ২২ মার্চ সারা বিশ্বে পালিত হবে বিশ্ব পানি দিবস। বিশ্ব পানি দিবসের  সূচনা ১৯৯২ সালে। ঐ বছর ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনে-রিওতে জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক অধিবেশনে একটি বিশেষ দিনকে স্বাদু পানি দিবস হিসেবে পালন করার কথা সুপারিশ করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ১৯৯৩ সালের ২২ শে মার্চকে প্রথম আন্তর্জাতিক পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর স্বাদু পানির উপর এক একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ২২ শে মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে পালিত পানি দিবসগুলিতে স্থান পেয়েছে নারী ও পানি, তৃষ্ণার জন্য পানি, পানির প্রতুলতা, ভূগর্ভস্থ পানি, ভাটির অধিবাসীর জীবন, একুশ শতকের পানি, পানি ও স্বাস্থ্য, উন্নয়নের জন্য পানি, ভবিষ্যতের জন্য পানি, জীবনের জন্য পানি, পানি ও সংস্কৃতি, পানির অপ্রতুলতা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, আন্ত-সীমান্ত পানি, পানির মান, শহরের জন্য পানি, পানি ও খাদ্যের নিশ্চয়তা,  ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মধ্যে ‘পানি ও জীবন’ শিরোনামে একটি পানি দশক (১৯৯৫-২০০৫) পালিত হয়েছে এবং ২০১৩ সাল ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ ওয়াটার কোঅপারেশন’ বা পানি নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বছর হিসেবে পালিত হয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে। পানি ও শক্তির একে অপরের উপর নির্ভরশীলতার (পানি-শক্তি যোগসূত্র) উপর গুরুত্ব আরোপ করে এবারের (২০১৪) বিশ্ব পানি দিবসের স্লোগান “ পানি ও শক্তি”। এই প্রবন্ধে বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পানি ও শক্তির মধ্যকার নির্ভরশীলতাকে ব্যাখ্যা করার প্রয়াস থাকবে।

মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৩

জাতীয় পানি নিরাপত্তা সূচক ও বাংলাদেশ

২০১৩ সালের এপ্রিলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের অর্থায়নে এশীয় পানি উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি  (Asian Water Development Outlook) প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রকাশনায় বাংলাদেশ সহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পানিসম্পদ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ কিছু চিত্র উঠে এসেছে। পানিসম্পদ উন্নয়নের জাতীয় পর্যায়ের এই রূপ আসলে জাতীয় পানি নিরাপত্তা সূচক বা National Water Sequirity Index (NWSI) এর মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছে। পুরো রিপোর্টটি এই লিঙ্ক থেকে পড়া যাবে। আমি এই লেখায় চেষ্টা করেছি এই রিপোর্টের আলোকে বাংলাদেশের জাতীয় পানি নিরাপত্তার একটি রূপ তুলে ধরতে। লেখাটি দুটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে জাতীয় পানি নিরাপত্তা সূচকের মৌলিক তথ্য ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা নির্ণয়ের সার্বিক ব্যবচ্ছেদ থাকবে। দ্বিতীয় পর্বে  কি কি পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশ তার জাতীয় পানি নিরাপত্তা সূচকের উন্নয়ন ঘটাতে পারবে তা বিশ্লেষণের চেষ্টা থাকবে।

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০১৩

আমাদের আনন্দবাড়ি

দেশ ছাড়ার আগে এনটিভিতে একটি সিরিজ নাটক দেখতাম, আমাদের আনন্দবাড়ী। মন খারাপ করা একটা নাটক, তারপরেও দেখতাম। কিভাবে যৌথ পরিবার গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে সেই নিয়ে গল্প। নাটকটির শেষ পর্ব আরো মন খারাপ করা। সবাই একেক দিকে চলে যায়, যৌথ বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলা হয় নতুন কোন উঁচু এপার্টমেন্ট গড়ার জন্য। রাস্তা দিয়ে সেই বাড়ির মেয়েটি একা একা হাঁটতে হাঁটতে একরকম দম বন্ধকরা কষ্টকর অনুভূতি নিয়ে নাটকটি শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমার আনন্দবাড়ী বলতে ছিল আমার হল, আমার ক্যাম্পাস। আমাদের আড্ডামুখর সেই সময়গুলি হারিয়ে গেছে, আমরা চলে গেছি একেক জন একেক দিকে। আমাদের আনন্দবাড়িটি অবশ্য ভেঙে ফেলা হয়নি, তবে সেখানে এসেছে নতুন মুখ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রেডের শেষ দিনগুলিতে সবসময় হাতে ছোট একটা মেরুণ রঙের বাধাই করা ডায়েরী নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। হাতের কাছে প্রিয় বন্ধু, বন্ধুপ্রতীম অনুজ বা অগ্রজ যাদেরকেই পেতাম ডায়েরীটা বাড়িয়ে দিতাম কিছু কথা লিখে দেবার জন্য। কেউ নিছক শুভকামনা লিখে দিত, আবার কেউ লিখত খুব আবেগ নিয়ে কিছু, কিংবা নস্টালজিক কোন স্মৃতিকথা। কেউ লিখত বাংলায়, কেউবা ইংরেজীতে। এই দশ বছরে অনেক কিছু হারিয়ে গেছে কিন্তু হারায়নি সেই ডায়েরিটা। প্রিয় দেশ, প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে অনেক অনেক দূরে থেকেও মাঝে মাঝেই নিয়ে সেই ডায়েরীটা নিয়ে বসি। মনটা খুব খারাপ থাকলে কখনো কখনো কিছু কিছু লেখা সেখান থেকে পড়ি। কখনো মন ভাল হয়, কখনো চোখ ছাপিয়ে কান্না আসে। তারপরেও সেটা সাথে রাখি। 

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৩

প্রয়োজন সমন্বিত পরিবেশ মডেলিং



এবছরের পানি দিবসের স্লোগান হচ্ছে “Water, water everywhere, only if we share”,  যার মূল কথা হচ্ছে একমাত্র সহযোগীতাই পারে বিপুল চাহিদার বিপরীতে পানির যোগানকে নিশ্চিত করতে। সেই সহযোগীতা নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় পর্যায়ে, দেশীয় পর্যায়ে এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। এই মাসের মাঝামাঝিতে আলবার্টা এনভায়রনমেন্ট এন্ড সাসটেইনেবল রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের দুই দিন ব্যাপী এনভায়রনমেন্টাল মডেলিং ওয়ার্কশপে যোগদান করেছিলাম। ওয়ার্কশপটির মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান, মাটি, বায়ু, পানি ও জীববৈচিত্র, ইত্যাদির কিভাবে সমন্বিত মডেলিং করা যায় সেটি নিয়ে মত বিনিময়। মজার বিষয় হচ্ছে এবারের পানি দিবসের থিমের সাথেও এই বিষয়টি দারুণ মিলে যায়, কারন পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগীতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্ত্বপূর্ন শর্ত হচ্ছে পরিবেশের এই উপাদানগুলোর মধ্যে সঠিক সমন্বয় স্থাপন করা। এই ওয়ার্কশপের অভিজ্ঞতা নিয়েই আজকে আমার এই নিবন্ধ।

বিশ্ব পানি দিবসঃ পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগীতা



২০১৩ সালে উপাত্ত মতে বছরের ১১৫ টি দিনকে জাতিসংঘের বিশেষ দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছেহিসেব কষলে তাই বছরের প্রায় ৩২ শতাংশ দিনই কোন না কোন বিশেষ দিন। তবে এর মধ্যে একটি দিন বাংলাদেশের মত নদীমাতৃক দেশের কাছে অধিক গুরুত্ত্ব বহন করে, আর তা হচ্ছে ২২ মার্চ, বিশ্ব পানি দিবস। কেন বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে সেই আলোচনায় পরে আসছি তার আগে এই দিনটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জেনে নেই। বিশ্ব পানি দিবসের  সূচনা ১৯৯২ সালে। ঐ বছর ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক অধিবেশনে একটি বিশেষ দিনকে স্বাদু পানি দিবস হিসেবে পালন করার কথা সুপারিশ করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ১৯৯৩ সালের ২২ শে মার্চকে প্রথম আন্তর্জাতিক পানি দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর স্বাদু পানির উপর এক একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে ২২ শে মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে পালিত পানি দিবসগুলিতে স্থান পেয়েছে নারী ও পানি, তৃষ্ণার জন্য পানি, পানির প্রতুলতা, ভুগর্ভস্থ পানি, ভাটির অধিবাসীর জীবন, একুশ শতকের পানি, পানি ও স্বাস্থ, উন্নয়নের জন্য পানি, ভবিষ্যতের জন্য পানি, জীবনের জন্য পানি, পানি ও সংস্কৃতি, পানির অপ্রতুলতা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, আন্তসীমান্ত পানি, পানির মান, শহরের জন্য পানি, পানি ও খাদ্যের নিশ্চয়তা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। এর মধ্যে পানি ও জীবনশিরোনামে একটি পানি দশক (১৯৯৫-২০০৫) পালিত হচ্ছে। এবছরের (২০১৩) পানি দিবসটি একটু ভিন্ন। তাজিকিস্তান ও আরো কয়েকটি দেশের প্রস্তাব অনুযায়ী ২০১০ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারন পরিষদের সভায় ২০১৩ সালকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ ওয়াটার কোওপারেশন’ বা পানি নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগীতার বছর হিসেবে। একথা অনস্বীকার্য যে জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়নের ফলে স্বাদু পানির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সে প্রেক্ষাপটে এবারের পানি দিবসের মূল উদ্দেশ্য আসলে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় পারস্পরিক সহযোগীতা বৃদ্ধি। বাংলাদেশের মত একটি দেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে সিহভাগ পানির উৎসই হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ, এই বছরের পানি দিবস তাই অধিক গুরুত্ত্ব বহন করে। 

রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৩

পানিসম্পদ বিষয়ক উন্মুক্ত তথ্য ও উপাত্তের জটিলতা


সম্প্রতি ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করছেন। তার সফরে আবারো উঠে এসেছে তিস্তা চুক্তির প্রসংগ। শুধু তিস্তা নয়, গঙ্গা, বারাক, ব্রহ্মপুত্র, সারি, ফেনী সহ সব অভিন্ন নদ-নদীর ক্ষেত্রে উজানের দেশের যেকোন উন্নয়ন অবকাঠামোর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। কিন্তু প্রয়শঃই এই গবেষণায় মূল প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে উপাত্ত। এমনকি আলোচিত টিপাইমুখ প্রকল্প বা ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে যেয়ে একমাত্র উপাত্তের অভাবেই তা বিসর্জন দিতে হয়েছে। অথচ আমাদের যুক্ত নদী কমিশন বাংলাদেশ ভারত অভিন্ন নদীগুলোর উপাত্তের একটি ভান্ডার হতে পারে। কিন্তু উপাত্ত যুক্ত নদী কমিশনের কাছে থাকলেই কি সেটা সবার কাছে উন্মুক্ত হবে? এই প্রসংগে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে এই লেখা।

বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

প্রবাসীদের চোখে শাহবাগ আন্দোলন



জাহিদুল ইসলাম, ফাহিম হাসান, ইশতিয়াক রউফ, রুমানা রিয়াজ আরিফিন, মুনাওয়ার হাফিজ, ও শান্তুনু বণিক


আমরা প্রবাসী বাংলাদেশী। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মত আমরাও বাংলাদেশকে ধারণ করি বুকের একদম ভেতরে। তাই যখন রাত জেগে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিজয় দেখি, কিংবা, গণিত অলিম্পিয়াডে তরুণ প্রজন্মকে ভাল করতে দেখি, তখন সাধারণ বাংলাদেশীদের মত আমরাও গর্বিত হই। আবার যখন দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য মর্যাদা হানিকর বা দুর্নীতির কোন খবর জানতে পারি, অন্য সবার মত আমরাও লজ্জিত হই। দেশে যখন বন্যা, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, আমরাও নিজেদের সামান্য সঞ্চয় তুলে পাঠিয়ে দেই বাংলাদেশে। বিদেশে থেকেও যেন আমাদের সারা অস্তিত্ত্ব জুড়ে আছে লাল সবুজের একটি দেশ, আমার, আমাদের বাংলাদেশ। 

আমরা বাংলাদেশের সেই প্রজন্মকে ধারণ করি যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। আমরা সেই প্রজন্মের প্রতিনিধি যারা ভুল, বিকৃত ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে পড়ে বড় হয়েছি। আমরা সেই দুর্ভাগা প্রজন্ম যারা পাকিস্তানীদের দোসরদেরকেই দেশে এবং দেশের বাইরে একসময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ত্ব করতে দেখেছি। সেই প্রজন্মের একজন হয়ে আজ যখন দেখতে পাই বাংলাদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, তখন আমরাও বুক ফুলিয়ে অন্যদের বলি- দেখ স্বাধীনতার একচল্লিশ বছর পার হলেও আজ আমরা বিশ্বাসঘাতকদের বিচার করছি। 

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহযোগীতা



১)

এবছর (২০১৩) জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে গিয়েছিলাম উইনিপেগে, পানিসম্পদ নিয়ে একটি দুই দিনের কর্মশালাতে যোগ দান করতে। উইনিপেগ কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশের রাজধানী। কানাডার আলবার্টা, সাস্কাচোয়ান আর ম্যানিটোবা এই তিন প্রদেশকে একসাথে বলা হয়ে থাকে ‘প্রেইরী প্রভিন্স’।‘প্রেইরী’ শব্দটির আক্ষরিক অনুবাদ করা দুষ্কর, তবে এটি জলবায়ু ও ভূপ্রাকৃতিকগত দিক দিয়ে একধরনের সমতল অঞ্চল যেখানে গাছপালা তূলনামূলক ভাবে কম, মূলত তৃণভূমি, এবং জলবায়ু বেশ শুষ্ক। এই তিন প্রেইরী প্রভিন্সের সরকারী ক্ষেত্রে কর্মরত পানিবিজ্ঞাণী ও পানিপ্রকৌশলীদের নিয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করেছে প্রেইরী প্রভিন্স ওয়াটার বোর্ড নামে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থাকানাডায় একেকটি প্রদেশের পানিসম্পদ তার নিজের, কিন্তু এই অঞ্চলের আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন চুক্তির নিরূপন, বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য প্রেইরী প্রভিন্স ওয়াটার বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল পানিসম্পদ বিষয়ক সাধারন সমস্যা নিয়ে প্রাদেশিক সরকারগুলোর পানিবিশেষজ্ঞদের মধ্যে সহযোগীতা বৃদ্ধি, সেই সাথে পানিসম্পদ ক্ষেত্রে এক প্রদেশের অর্জন অন্য প্রদেশের পানিবিশেষজ্ঞদের সাথে শেয়ার করা। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আলবার্টা প্রদেশে কর্মরত, কিন্তু কর্মশালাটিতে যোগ দিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই তিন প্রদেশের পানিসম্পদগত বিভিন্ন সমস্যা, সমাধানের উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বেশ ভাল একটি ধারনা পেলাম।

সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১২

গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তির সাফল্য-ব্যর্থতা

জাহিদুল ইসলাম ও ডঃ মোঃ খালেকুজ্জামান

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৭ টি আন্তঃসীমান্ত নদী প্রবাহমান থাকলেও ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তিই এই দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে আন্তঃ-নদীর পানিবন্টনের একমাত্র উদাহরন। সঙ্গত কারণেই, এই চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন দুই দেশের জন্যই গুরুত্ত্বপূর্ন।গঙ্গার পানি প্রবাহ আর এর অববাহিকা বিধৌত পলি যেমন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত চার কোটি মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় তেমনি তা এই ব-দ্বীপ অঞ্চলের সার্বিক পরিবেশ-প্রতিবেশগত ভারসাম্যের জন্যও গুরুত্ত্বপূর্ন। বিশেষত, সুন্দরবনের মত একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের টিকে থাকা নির্ভর করছে গঙ্গা এবং তার শাখা নদী সমূহের যথাযথ প্রবাহের উপর। গঙ্গা অববাহিকা নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ জুড়ে বিস্তৃত। আর তাই সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রেক্ষাপটে এই অববাহিকার সকল অংশীদারদের পরিকল্পনা হওয়া উচিৎ পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রকে সমুন্নত রেখে গঙ্গার পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। কিন্তু হতাশার কথা হচ্ছে এইযে আন্তঃ-নদীর ক্ষেত্রে এখনো অববাহিকা ভিত্তিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার সেরকম কোন দৃষ্টান্ত দক্ষিণ এশিয়ায় নেই।